‘কেন আমি ফেইসবুকে’
যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেস উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে স্মরণিকা ‘স্বপ্ন পূরণে’। এতে ‘কেন আমি ফেইসবুকে’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। নিচে তার লেখাটি তুলে ধরা হলো।
আমি তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার জন্য একটি পদ্ধতি হিসেবে ফেইসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। তরুণরা তাদের তথ্যের জন্য অধিকাংশ অনলাইনের বিভিন্ন উৎস যেমন ফেইসবুক হতে পায়। তারা সংবাদপত্র তেমন একটা পড়ে না, তাই আপনি যদি তাদের কাছে পৌঁছাতে চান আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেই হবে। এটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উভয় নির্বাচনেই সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং আমি বাংলাদেশেও তাই করতে চেয়েছি।
আমি মনে করি, অনলাইনের রাজনৈতিক কার্যক্রম দলের সমর্থকদের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে পারে। ঐতিহ্যগতভাবে দলের ভিত্তি ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং দলের স্থানীয় কমিটি থেকে গঠিত হয়ে থাকে। আমি দেখলাম তরুণদের বড় একটি অংশ রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট হতে আগ্রহী, কিন্তু তারা গতানুগতিক ছাত্র রাজনীতিতে জড়াতে চায় না এবং সমাবেশ মিছিলও করতে চায় না। আওয়ামী লীগের পক্ষে সংগঠিত হওয়া এবং রাজনীতিতে যুক্ত হবার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া তাদের একটি পথ তৈরি করে দিয়েছে।
রাজধানীর বাইরে স্থানীয় কমিটির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের বার্তা প্রচারে একটি অসাধারণ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। আগে আমরা প্রতিটি স্থানীয় কমিটির বিভিন্ন পার্টি কমিটির চেইন অব কমাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের বার্তা পাঠাতাম। এতে অনেক সময় লেগে যেত। এই ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার যুগে সংবাদ খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়, তাই অনলাইনে বার্তা রাখা আমাদের দলের সব কর্মীদের তাৎক্ষণিক বার্তা পেতে সুযোগ তৈরি করে দেয়। আজকালকের দিনে পৃথিবীব্যাপী সেলিব্রিটি এবং রাজনীতিবিদরা ফেইসবুক পেইজ এবং তাদের টুইটারের মাধ্যমে বিবৃতি পোস্ট করেছেন, যা মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলো লুফে নিচ্ছে। এটা বিশ্বের একটি প্রবণতা হয়ে উঠেছে। এটা আমাদের এবং সংবাদ মাধ্যমের অনেক সময় ও শ্রম বাঁচিয়ে দিচ্ছে যাতে প্রতিদিনকার ইস্যুর জন্য আমার প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করা বা প্রেস রিলিজ দেয়ার কোন প্রয়োজন হচ্ছে না। সংবাদকর্মীদের আমার বক্তব্য ধারণের জন্য সময় নিয়ে পার্টি অফিসে আসতে হচ্ছে না।
ফেইসবুক পেজে আমি অনেক নেতিবাচক মন্তব্যও পেয়ে থাকি। তবে নেতিবাচক সমালোচনা আমাকে বিরক্ত করেনা এবং আমার নীতিতে সেসব সেন্সর করা হয় না। আমি দেখেছি যে ইতিবাচক মন্তব্য নেতিবাচককে অতিক্রম করে যায় এবং তাই বেশ দ্রুত নেতিবাচক মন্তব্য তার নিচে চাপা পড়ে। আমি যদিও কিছু অবমাননাকর মন্তব্য বা আমার ও আমার পরিবারের বিপক্ষে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা হলে তা সেন্সর করি। যদি আপনি আমার বিরুদ্ধে কোন অসত্য অভিযোগ করেন তবে তা আমি মুছে দেব। এটা আমার ফেইসবুক পেইজ,আপনি আপনার মিথ্যা প্রপাগান্ডা অন্য কোথাও ছড়াতে পারেন।
যেসব তরুণ রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নয় তারা ফ্যান পেইজের মাধ্যমে আমার মতো ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে কাছে আসার অবারিত সুযোগ পাচ্ছে বলে আমি আশা করি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পেইজটির বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে এই যোগাযোগ একমুখী হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু প্রতিটি কমেন্ট এবং বার্তার উত্তর দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয় তাই আমি মনে করি, মন্তব্যকারীদের দ্বারা উত্থাপিত বিস্তৃত বিষয় ও তাদের উদ্বেগের কারণ নিয়ে পরবর্তী পোস্ট দেই।
তরুণদের জন্য আমি নতুন কিছু ধারণা নিয়ে চিন্তা করছি, কিন্তু এখনই কোন একটি নির্দিষ্ট হয়নি। নির্বাচন এক-দেড় মাস হলো শেষ হয়েছে, আগামী ৫ বছর নিয়ে পরিকল্পনা করার সময় আমি এখনও করে উঠতে পারিনি!
Post Comment
No comments