বয়স এখন বাহাত্তর
একটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে অনেক সাফল্য
যুক্ত থাকে। এর অন্যতম একটি হলো মানুষের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য, নিবিড় ও শঙ্কামুক্ত
জীবনের জন্য যা অপরিহার্য। পাশাপাশি নানাভাবে যুক্ত হয় শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির
বিকাশ। যে দিকগুলো একটি জাতির মানসিক উন্নয়ন ও চেতনাকে পরিশীলিত করে। মনে রাখতে
হবে, অর্থনৈতিক সংকট একটি জাতিকে যেমন পশ্চাতে ঠেলে দেয়, তেমনি সুস্থ ও সাবলিল
ধারাকে ক্রমেই জরাগ্রস্ত করে তুলে।
বিশ্বে
অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ এখন ৪২তম স্থানে অবস্থান করছে। ১৬টি দেশ পেছনে ফেলে
বাংলাদেশের এ অসাধারণ অর্জন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির একটি অন্যতম উদাহরণ। অর্র্থাৎ আমরা
এগিয়ে যাচ্ছি। আর তার প্রভাবও পড়েছে জনজীবনে। বেড়েছে দেশের মানুষের গড় আয়ু, যা এখন
গড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছর। নিঃসন্দেহে এটি অগ্রগতির একটি অন্যতম পরিচায়ক।
২০১৭
সালে পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭০ বছর ৭ মাস ৬ দিন। ২০১৬ সালে পুরুষের গড় আয়ু ছিল
৭০ বছর বছর ৩ মাস ১৮ দিন। তবে পুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু বাড়ার হার বেশি। ২০১৭
সালে নারীর গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। ২০১৬ সালে নারীর গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর ১০ মাস
২৪ দিন। ২০১৭ সালে এটি বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর ৬ মাস। গত বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে
বিবিএস মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল
স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি)’ শীর্ষক এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে
এসেছে।
প্রতিবেদন
প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
জানান, চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৭ থেকে ৭ দশমিক ৮
শতাংশ অর্জিত হতে পারে। এর আগে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের প্রাক্কলিত হিসাবে
প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হিসাব করা হয়েছিল। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে যে তথ্য
আছে তা হিসাব করলে আমরা প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলিত হিসাবকে ছাড়িয়ে যাব।
তবে
আমরা মনে করি, দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও ব্যাপক ভূমিকা
রাখতে হবে। দেশের অগ্রগতিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশের
তুলনায় আমরা এগিয়ে আছি। বলতে পারি এগিয়ে যাচ্ছি। ১০ বছর আগে বিশ্বের অর্থনৈতিক
সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫৮তম। এখন হয়েছে ৪২তম। অর্থাৎ ১৬টি দেশকে পেছনে ফেলে
বাংলাদেশ এই অর্জনকে সম্ভব করেছে। ২০৪১ সালে অবস্থান হবে ৩৯তম। আমরা আশা করি, সব
বাধাবিপত্তিকে অতিক্রম করে বাংলাদেশ তার লক্ষ্যে অবশ্যই পৌঁছে যাবে—এটাই আমাদের
প্রত্যাশা।
Post Comment
No comments