Breaking News

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী শ্রমিকদের অন্য জগত

মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, সন্তানদের ফেলে বিদেশ বিভুইয়ে অর্থের সন্ধানে ছুটছেন বাংলাদেশী সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। কর্মব্যস্ত দিন শেষে, সপ্তাহ শেষে ক্লান্তি ভর করে তাদের মনে। সেই ক্লান্তি দূর করে মনকে চাঙ্গা করতে সিঙ্গাপুরে অভিবাসী এসব শ্রমিকরা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তাতে পারফরম করেন বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও ফিলিপাইনের মতো দেশের কমপক্ষে ৯০ জন শ্রমিক। তারা মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়ে নাচ, গান, নাটক, কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে নিজেদের একটি জগত গড়ে তুলেছেন। মালয়েশিয়ার অনলাইন স্টার পত্রিকা তাদেরকে নিয়েই একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশী শ্রমিক আহসান হাবিব সোহেলের (২৭)। তিনি ‘মাইগ্রেন্টস ব্যান্ডের’ সদস্য। এই ব্যান্ডটি গড়ে উঠেছে প্রধানত বাংলাদেশী শ্রমিকদের নিয়ে। দেখা যায়, আহসান হাবিব মাইগ্রেন্ট কালচারাল শো বা অভিবাসীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি গান গাইছেন। তার গানে তবলা বা ঢোল বাজিয়ে তাল দিচ্ছেন আরেক শ্রমিক। পাশেই নাচতে দেখা যায় একজন যুবতীকে। স্টার অনলাইন লিখেছেÑ সপ্তাহের প্রতি রোববার ছুটি। গত দুই মাস ধরে ৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশী নির্মাণ শ্রমিকদের সুপারভাইজার ফজলে এলাহি তার মাথা থেকে নিরাপত্তা হেলমেট খুলে রাখেন। তিনি মাইগ্রেন্ট কালচারাল শো দেখার প্রস্তুতি নেন। অভিবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশী শ্রমিকদের এ অনুষ্ঠান দেখতে তিনি স্বদেশী রিপন চৌধুরী (২৭), একে জিলানি (২৫), সৌরজিক সারোথি দাস (২৫), নীল সাগর শাহিন (২৭)কে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান এই অনুষ্ঠানে। তারা উপভোগ করেন এই ব্যান্ডের রিহার্সেল নাচ। এতে ফিলিপাইনের নারী গৃহকর্মীরা নাচেন। এটি অনুষ্ঠিত হয় অরচার্ড রোডে স্কেপে। সেখানে তারা উপভোগ করেন ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশী শ্রমিকেদের গান। এ এলাকাটি পরিচিতি পেয়েছে লিটল ইন্ডিয়া নামে। এ ছাড়া তারা উপভোগ করেন নাটকের অডিশন। সিং লিট স্টেশন নামে নাটকের একটি প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে জালান কুবোরে। তাতে তারা অভিনয়ও করেন। অভিবাসীদের এই শো স্থায়ী হয় চার ঘন্টা। এতে উপস্থিত হন প্রায় ৪০০ অতিথি। এর মধ্যে থাকেন ট্রানসায়েন্ট ওয়ার্কার্স কাউন্ট টু (টিডব্লিউসি২) এর নির্বাহী কমিটির সদস্য ডেবি ফোরডাইস। উপস্থিত থাকেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রুতিনিধি, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য, আইদা সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, ইন্দোনেশিয়া ফ্যামিলি নেটওয়াক। ফজলে এলাহি বলেছে, এই ইভেন্টের মাধ্যমে আমি বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধন ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইভেন্ট। উল্লেখ্য, ফজলে এলাহি সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন প্রায় ৮ বছর আগে। অনুষ্ঠানে ইন্দোনেশিয়ার জাভার আঞ্চলিক দুটি গান পরিবেশন করেন ইন্দোনেশিয়ার গৃহকর্মী মেনিক শ্রী সুয়াতি (৪৬)। তিনি দ্বৈত নাচও পরিবেশন করেন। তার মধ্যে এই প্লাটফরমটি তাদের মেধার প্রকাশ ঘটানোর একটি উত্তম স্থান। তিনি ১৫ বছর ধরে সিঙ্গাপুরে কাজ করছেন। 

No comments