এখন গ্রামে বসেই দেখানো যায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার
মফস্বল শহর বা পল্লী অঞ্চলের একজন দরিদ্র অসহায় রোগী যার ঢাকা শহরে এসে
পয়সা খরচ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর সামর্থ নেই অথবা কোন জটিল রোগী যাকে
অনেক দূর থেকে যানজটে অস্থির ঢাকা শহরে পাঠাতে গেলে অনেক দেরী হয়ে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে দূর দূরান্তের রোগীরা টেলিভিশন স্ক্রীন এবং ক্যামেরার
সামনে বসেই নিতে পারছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা সেবা। এই
চিকিৎসা পদ্ধতি ‘টেলিমেডিসিন’ সেবা হিসেবে পরিচিত।
এই টেলিমেডিসিন সেবার বদৌলতে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। টেলিমেডিসিন কে বাংলায় বলা হয় দূর চিকিৎসা। অর্থাৎ প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার একজন রোগী ইউনিয়নে থাকা টেলিমেডিসিন উদ্যেগতার কাছে যেয়ে কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে অন্য শহর বা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় থাকা এমবিবিএস বা তারও বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা-পরামর্শ নিতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা দূরবর্তী অসহায় রোগীদের জন্য একসময় যা ছিল কল্পনাতীত আজ তাই সম্ভব হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রাণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগে। দেশের অনলাইন এই চিকিৎসা সেবা পদ্ধতি এরইমধ্যে জিতে নিয়েছে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি-২০১৭’ এ ‘ই-স্বাস্থ্য’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করেছে এই টেলিমেডিসিন সেবা।
জানা যায়, চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নয়নে টেলিমেডিসিন ধারণা নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২০১৩ সালের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে এই চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়। আরো দুই বছর মাঠ পর্যায়ে সফল পরীক্ষণ শেষে প্রকল্পটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাভ করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাভের পর ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘টেলিমেডিসিন কার্যক্রম’ ছড়িয়ে যেতে শুরু করে।
কিভাবে চলে টেলিমেডিসিন সেবা: গ্রামের অনেক রোগী স্থানীয় ফার্মেসীতে যেয়ে ‘ওষুধ বিক্রেতাকেই ডাক্তার’ মনে করে তার পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করেন। এতে অনেক ভুল চিকিৎসা এবং এন্টিবায়টিক ওষুধের ভুল প্রয়োগ হয়। ফলে প্রতি বছর বহু রোগী বড় ধরনের জটিলতায় ভোগেন। গ্রামের সেসব মানুষ এখন অতি সহজেই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন। এই প্রকল্পে সাধারণত গ্রামের ফার্মেসীর ওষুধ বিক্রেতারা টেলিমেডিসিন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে উদ্যোক্তার কাছে থাকা যন্ত্রের সাহায্যে রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা ডাক্তার সহজেই জেনে নিতে পারেন।
প্রতি ইউনিয়নে একজন করে উদ্যোক্তা কাজ করেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে কোন সময় যেয়ে এমবিবিএস বা তার থেকেও অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন রোগীরা। উদ্যোক্তা অনলাইনের মাধ্যমে রোগীর নাম, বয়স নিবন্ধন করে স্কাইপের মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে রোগীকে সংযুক্ত করেন। প্রয়োজন হলে ডাক্তার উদ্যোক্তাকে রোগীর শরীরে স্টেথোস্কোপ ধরতে বলেন। ডাক্তার দূর থেকে তখন রোগীর হার্টবিট শুনতে পান। একইভাবে ডাক্তার চাইলে ইসিজির ফলাফলও দেখে নিতে পারেন। সব দেখে-শুনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। উদ্যোক্তার কাছে থাকা প্রিন্টারে সেই প্রেসক্রিপশন প্রিন্ট হয়ে পৌঁছে যায় রোগীর হাতে। এভাবে অনলাইনের মাধ্যমে গ্রামে বসেও রোগীরা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে পারেন। একজন রোগী টেলিমেডিসিন সেবা একবার গ্রহণ করলে পুনরায় ডাক্তার দেখানোর সময় তাকে আর নিবন্ধন করতে হয় না। কোড নাম্বার বললে রোগীর নাম, বয়স ও পূর্বের প্রেসক্রিপশন চলে আসবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে টেলিমেডিসিন সেবা: ঢাকা
মেডিকেল কলেজ থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে রোগী দেখা হয়। বর্তমানে প্রতি সোমবার
কলেজের মেডিসিন বিভাগের টেলিমেডিসিন বিষয়ক টীমের কো-অর্ডিনেটর এবং মেডিসিন
বিভাগের টিম লিডার সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ যায়েদ হোসেন রোগী দেখছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বান্ধব বর্তমান সরকারের এই টেলিমেডিসিন প্রকল্পে ঢাকা মেডিকেল থেকে আমরা কয়েকজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পালাক্রমে নির্ধারিত সময়ে ক্যামেরার সামনে বসে অপর প্রান্তের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। এই কার্যক্রমে আমার সঙ্গে আরো আছেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. অপর্ণা দাস, সহযোগী অধ্যাপক ডা.পার্থ প্রতিম দাস এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ কে এম হুমাযূন কবির।’
জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল ছাড়াও এখন পর্যন্ত টেলিমেডিসিন প্রকল্পে সারাদেশে ৯০টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে সেবা গ্রহীতা মোট রোগীদের মধ্যে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা শতকরা ৭৫ ভাগ। আর ব্যবহারকারীদের মধ্য থেকে ১০% রোগী একাধিকবার টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেলিমেডিসিন কার্যক্রমের টিম লিডার ডা. যায়েদ হোসেন আরো জানান, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গাইনী, সার্জারি ও শিশু বিশেষজ্ঞরা ঢাকা মেডিকেল থেকে ক্যামেরার সামনে বসে টেলিমেডিসিন সেবা দেয়া হচ্ছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা অসংখ্য রোগীকে এই সেবা দিয়েছেন। যা খুবই কার্যকর বলে বিবেচিত হচ্ছে এবং দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এটি স্বাস্থ্য সেক্টরে একটি মাইলফলক তথা নবযুগের সূচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই টেলিমেডিসিন সেবার বদৌলতে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। টেলিমেডিসিন কে বাংলায় বলা হয় দূর চিকিৎসা। অর্থাৎ প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার একজন রোগী ইউনিয়নে থাকা টেলিমেডিসিন উদ্যেগতার কাছে যেয়ে কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে অন্য শহর বা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় থাকা এমবিবিএস বা তারও বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা-পরামর্শ নিতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা দূরবর্তী অসহায় রোগীদের জন্য একসময় যা ছিল কল্পনাতীত আজ তাই সম্ভব হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রাণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগে। দেশের অনলাইন এই চিকিৎসা সেবা পদ্ধতি এরইমধ্যে জিতে নিয়েছে আর্ন্তজাতিক পুরস্কার। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি-২০১৭’ এ ‘ই-স্বাস্থ্য’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করেছে এই টেলিমেডিসিন সেবা।
জানা যায়, চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নয়নে টেলিমেডিসিন ধারণা নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২০১৩ সালের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে এই চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়। আরো দুই বছর মাঠ পর্যায়ে সফল পরীক্ষণ শেষে প্রকল্পটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাভ করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাভের পর ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘টেলিমেডিসিন কার্যক্রম’ ছড়িয়ে যেতে শুরু করে।
কিভাবে চলে টেলিমেডিসিন সেবা: গ্রামের অনেক রোগী স্থানীয় ফার্মেসীতে যেয়ে ‘ওষুধ বিক্রেতাকেই ডাক্তার’ মনে করে তার পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করেন। এতে অনেক ভুল চিকিৎসা এবং এন্টিবায়টিক ওষুধের ভুল প্রয়োগ হয়। ফলে প্রতি বছর বহু রোগী বড় ধরনের জটিলতায় ভোগেন। গ্রামের সেসব মানুষ এখন অতি সহজেই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন। এই প্রকল্পে সাধারণত গ্রামের ফার্মেসীর ওষুধ বিক্রেতারা টেলিমেডিসিন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে উদ্যোক্তার কাছে থাকা যন্ত্রের সাহায্যে রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা ডাক্তার সহজেই জেনে নিতে পারেন।
প্রতি ইউনিয়নে একজন করে উদ্যোক্তা কাজ করেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে কোন সময় যেয়ে এমবিবিএস বা তার থেকেও অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন রোগীরা। উদ্যোক্তা অনলাইনের মাধ্যমে রোগীর নাম, বয়স নিবন্ধন করে স্কাইপের মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে রোগীকে সংযুক্ত করেন। প্রয়োজন হলে ডাক্তার উদ্যোক্তাকে রোগীর শরীরে স্টেথোস্কোপ ধরতে বলেন। ডাক্তার দূর থেকে তখন রোগীর হার্টবিট শুনতে পান। একইভাবে ডাক্তার চাইলে ইসিজির ফলাফলও দেখে নিতে পারেন। সব দেখে-শুনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। উদ্যোক্তার কাছে থাকা প্রিন্টারে সেই প্রেসক্রিপশন প্রিন্ট হয়ে পৌঁছে যায় রোগীর হাতে। এভাবে অনলাইনের মাধ্যমে গ্রামে বসেও রোগীরা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে পারেন। একজন রোগী টেলিমেডিসিন সেবা একবার গ্রহণ করলে পুনরায় ডাক্তার দেখানোর সময় তাকে আর নিবন্ধন করতে হয় না। কোড নাম্বার বললে রোগীর নাম, বয়স ও পূর্বের প্রেসক্রিপশন চলে আসবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বান্ধব বর্তমান সরকারের এই টেলিমেডিসিন প্রকল্পে ঢাকা মেডিকেল থেকে আমরা কয়েকজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পালাক্রমে নির্ধারিত সময়ে ক্যামেরার সামনে বসে অপর প্রান্তের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। এই কার্যক্রমে আমার সঙ্গে আরো আছেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. অপর্ণা দাস, সহযোগী অধ্যাপক ডা.পার্থ প্রতিম দাস এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ কে এম হুমাযূন কবির।’
জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল ছাড়াও এখন পর্যন্ত টেলিমেডিসিন প্রকল্পে সারাদেশে ৯০টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে সেবা গ্রহীতা মোট রোগীদের মধ্যে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা শতকরা ৭৫ ভাগ। আর ব্যবহারকারীদের মধ্য থেকে ১০% রোগী একাধিকবার টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেলিমেডিসিন কার্যক্রমের টিম লিডার ডা. যায়েদ হোসেন আরো জানান, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গাইনী, সার্জারি ও শিশু বিশেষজ্ঞরা ঢাকা মেডিকেল থেকে ক্যামেরার সামনে বসে টেলিমেডিসিন সেবা দেয়া হচ্ছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা অসংখ্য রোগীকে এই সেবা দিয়েছেন। যা খুবই কার্যকর বলে বিবেচিত হচ্ছে এবং দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এটি স্বাস্থ্য সেক্টরে একটি মাইলফলক তথা নবযুগের সূচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
No comments