কক্সবাজারে পিটার হাস ও এনসিপি নেতাদের বৈঠক : ষড়যন্ত্রের নতুন অধ্যায় নাকি নির্বাচন ঠেকাও মিশন?
আজ কক্সবাজারের একটি হোটেলে ঢাকায় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা। এই বৈঠকের সময় ও প্রেক্ষাপট নিঃসন্দেহে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট 'জুলাই দাঙ্গা'-র প্রথম বার্ষিকীতে এই বৈঠক কাকতালীয় নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশলের অংশ বলে মনে হচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস এনসিপি নেতাদের পিটার হাসের কাছে পাঠিয়েছেন। ইউনুস বিএনপিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার কথা দিয়ে জুলাই ঘোষণার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করলেও, এখন এনসিপি বা তার মিত্ররা নির্বাচন চায় না। কীভাবে এই নির্বাচন ঠেকানো যায়, তারই কৌশল নির্ধারণ করতে তারা পিটার হাসের শরণাপন্ন হয়েছে। ইউনুস তার আমেরিকান যোগাযোগগুলো থেকে সাড়া পাচ্ছেন না বলে, এখন একমাত্র ভরসা পিটার হাস—যার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর উপর চাপ তৈরি করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হতে পারে।
২০২৪ সালের এই দিনে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বহু বিদেশী রাষ্ট্রের অর্থায়নে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সমর্থনে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক জিহাদি গোষ্ঠীর নেতৃত্বে যে রক্তক্ষয়ী পটপরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল, তার সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই আজ এনসিপি তথা কিংস পার্টির নেতৃত্বে। হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী, তাসনিম জারা—এরা সেই প্ল্যাটফর্মের মুখ, যারা "গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার"-এর নামে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিল। আজ তারা পিটার হাসের মতো একজন বিতর্কিত বিদেশী কূটনীতিকের সঙ্গে গোপনে আলোচনা করছে—এটি কি সাধারণ কোনো রাজনৈতিক সাক্ষাৎ, নাকি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের সূচনা?
পিটার হাস বাংলাদেশের রাজনীতিতে কখনোই নির্মোহ পর্যবেক্ষক ছিলেন না। তার কূটনৈতিক কার্যক্রম বারবারই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে কলঙ্কিত। মার্কিন ডিপস্টেটের একনিষ্ঠ সেবক হিসেবে তিনি বাংলাদেশে যে ভূমিকা রেখেছেন, তাতে এই বৈঠককে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা ছাড়া উপায় নেই।
৫ আগস্টের এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন কূটকৌশলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। দেশের মানুষ গত এক বছরে রক্তঝরা শিক্ষা নিয়ে এখন সচেতন। তারা জুলাই দাঙ্গার ইতিহাস ভুলে যায়নি। তারা জানে, কারা গণতন্ত্রের নামে দেশকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল। রাজনৈতিক সংলাপ গণতন্ত্রের অংশ, কিন্তু যখন তা বিদেশী প্রভাব ও ষড়যন্ত্রের ছায়ায় হয়, তখন তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
এখন প্রশ্ন হলো, পিটার হাস ও এনসিপির এই মিলনমেলা কি ২০২৪-এর ধ্বংসযজ্ঞের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা, নাকি নির্বাচন বানচালের শেষ চেষ্টা? সময়ই উত্তর দেবে।
No comments