মারণাস্ত্রের বিকল্প 'মানব অস্ত্র'
Wazed Hasan Shawon ভাইয়ের ফেসবুক ওয়াল থেকে:
প্রিয়া সাহার কথাগুলো শুনলাম।
চমকিত,বিস্মিত,হতবাক কিংবা ক্ষুব্ধও হইনি।কেননা সন্ত্রাস,ধর্মীয় উগ্রবাদ,সাম্প্রদায়িকতা নামক ইস্যুগুলো সামাজিক স্তরে সৃষ্টি হয়।আর ইস্যুগুলো প্রয়োগ করা হয় মূলতঃ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।এই প্রক্রিয়ার বিষয়ে আমরা অবগত আছি আমাদের বুঝ হওয়া থেকেই।
কারো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।আপনার হিন্দু কিংবা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী যে সহপাঠী বন্ধুটির সাথে আপনার দেখা হয়না আজ বহুবছর হলো,তার খোঁজখবর আসলে আপনি নিজে থেকে কতটুকু রেখেছেন?তার পরিবারের সাথে আপনার নূন্যতম কোন যোগাযোগ কি আছে? ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখুন- আপনার সেই দেখা না হওয়া বন্ধুটিকে কেউ গুম করেনি,তিনি নির্যাতিতও হননি।আসলে তিনি ওপার বাংলায় চলে গেছেন।আর যারা যখন যান,তখন তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের দু'চারজন ছাড়া হয়তো পাশের কোন প্রতিবেশীও জানতে পারেন না।চলে যাওয়ার পর জানা যায় যে,অমুক ওপার বাংলায় চলে গেছেন।
গাইবান্ধায় এরকম কোন অভিযোগ কি কেউ করেছেন কোনদিন?আমার জানামতে এমন নজির নেই।শহরের অনেকেই তো চলে গেছেন।কিভাবে গেছেন?মনে করে দেখুন- গুম হওয়ার মতো করেই চুপিসারে একরাতেই পরিবার নিয়ে তারা চলে গেছেন।এই শহরের রমেশ ঘোষ,নারু বাবুরা এভাবেই গেছেন।যখন গেছেন,তাদের দীর্ঘদিনের পুরাতন কর্মচারীরাও তখন জানতে পারেনি।পাশের কোন ব্যবসায়ী বন্ধুও যাবার আগে জানতে পারেননি।বহুবছরের পুরাতন প্রতিবেশীকেও তারা বুঝতেই দেননি।একদিনের ব্যবধানে সারাজেলায় মুখে মুখে গল্প হলো রমেশ ঘোষ নেই,গল্প হলো নারু বাবুও চলে গেছে।
কেন?কেউ কি ঘুতিয়েছে?তাদের সহায়সম্পদ কি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছিলো এখানে?বা তাদের পরিবারের কোন নারীর প্রতি কি কোন অত্যাচার করেছিলো কেউ?তাও না।কোনও কারণ কি খুঁজে পেয়েছেন কেউ?নিশ্চয়ই না।তাহলে কেন তারা যান আর কেনইবা রমেশ ঘোষের মতো ধনাঢ্য মানুষটি ওপারে গিয়ে গরু চড়িয়ে বেড়ান তা ঐ দেশান্তরী মানুষগুলোই জানেন।অথচ,তারা এখানেই ভালো ছিলেন।
যারা গেছেন,তারা স্বেচ্ছায় চলে গেছেন।তারা আজ হয়তো শিলিগুড়ি,দার্জিলিং,জলপাইগুড়ি,
কুচবিহার কিংবা অন্য কোথাও আছেন।যারা এখনো এদেশে তাদের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করেননি,তাদের চলে যাওয়ার তথ্যটি এখনো গোপন রাখা হচ্ছে কৌশলগত কারনে।এদেশে থেকে যাওয়া তাদের স্বজনরা দূরবর্তী কোন জেলার কথা বলেন যে,তারা সেখানে ব্যবসা করছেন।মাঝেমধ্যে নাকি খোঁজ নিতে আসেন।আসলে চিটাগাং থেকে গাইবান্ধা আসতে যে সময় লাগে,সেই সময়ের মধ্যে দু/চারবার আমরা ওপার বাংলা থেকে ঘুরে আসি।
কুচবিহার কিংবা অন্য কোথাও আছেন।যারা এখনো এদেশে তাদের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করেননি,তাদের চলে যাওয়ার তথ্যটি এখনো গোপন রাখা হচ্ছে কৌশলগত কারনে।এদেশে থেকে যাওয়া তাদের স্বজনরা দূরবর্তী কোন জেলার কথা বলেন যে,তারা সেখানে ব্যবসা করছেন।মাঝেমধ্যে নাকি খোঁজ নিতে আসেন।আসলে চিটাগাং থেকে গাইবান্ধা আসতে যে সময় লাগে,সেই সময়ের মধ্যে দু/চারবার আমরা ওপার বাংলা থেকে ঘুরে আসি।
তাই বলে নির্যাতন যে হয়না,তা কিন্তু নয়।তবে সেটা নিয়মিত ঘটনা নয়।ভয়াবহ অবস্থা কিংবা আশংকার কথা যদি বলি,তাহলে সেইরকম আতংক কিংবা আশংকা সৃষ্টি হয়েছিলো বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সময়টাতে।তারপর দীর্ঘবিরতি দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে সত্যিই সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছিলো ২০০১ সালে,জাতীয় নির্বাচনের পর।
আচ্ছা,সংখ্যালঘু নির্যাতন কি ইন্ডিয়ায় হয় না?ওখানেও নির্যাতন হয়,হচ্ছেও ইদানিং।কয়জন মুসলমান ইন্ডিয়া থেকে চলে এসেছেন এদেশে?৪৭-এ এসেছেন কিছু,৬৫'তে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এসেছেন কিছু।একসময় আমার নানা-নানিও আশংকাজনক পরিস্থিতির মুখে ওপার বাংলা থেকে বাংলাদেশে ঢুকে প্রথমে লালমনিরহাট,তারপর সৈয়দপুর হয়ে অবশেষে গাইবান্ধার মধ্যপাড়ায় এসে স্থায়ী হয়েছেন।জন্মভূমি ছেড়ে আসা কিংবা ছেড়ে যাওয়া এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের পাড়া-মহল্লা,সমাজ কিংবা দেশবাসীর অজানা নয়।গুম কিংবা খুন হওয়ার কথাও নিশ্চয়ই আমাদের অজানা নেই।
আচ্ছা,সংখ্যালঘু নির্যাতন কি ইন্ডিয়ায় হয় না?ওখানেও নির্যাতন হয়,হচ্ছেও ইদানিং।কয়জন মুসলমান ইন্ডিয়া থেকে চলে এসেছেন এদেশে?৪৭-এ এসেছেন কিছু,৬৫'তে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এসেছেন কিছু।একসময় আমার নানা-নানিও আশংকাজনক পরিস্থিতির মুখে ওপার বাংলা থেকে বাংলাদেশে ঢুকে প্রথমে লালমনিরহাট,তারপর সৈয়দপুর হয়ে অবশেষে গাইবান্ধার মধ্যপাড়ায় এসে স্থায়ী হয়েছেন।জন্মভূমি ছেড়ে আসা কিংবা ছেড়ে যাওয়া এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের পাড়া-মহল্লা,সমাজ কিংবা দেশবাসীর অজানা নয়।গুম কিংবা খুন হওয়ার কথাও নিশ্চয়ই আমাদের অজানা নেই।
গাইবান্ধা-রংপুর অঞ্চলে তো অনেক হিন্দু বন্ধু আমার আছে।এমনকি পীরগঞ্জের কিছু খ্রিস্টান ছেলের সাথেও আমার ব্যক্তিগত পরিচয় কিংবা নূন্যতম যোগাযোগ আছে,এমনকি যাতায়াতও আছে।প্রিয়া সাহার বয়ানের সত্যতার মুখোমুখি হইনি কোনদিন।সহায়-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কারণে কোন ঘটনা ঘটে যাওয়া-তেমন ঘটনা মুসলমানদের মাঝেও আছে।এমন ইস্যুগুলো মূলতঃ মানুষের সাথে মানুষের।ধর্মের সাথে ধর্মের নয়।ধর্মীয় সংখ্যালঘু নামক সাম্প্রদায়িক শব্দটি আসলেই রাজনৈতিক শব্দ।শব্দটির স্রষ্টা যেই হোক,লক্ষ্য করে দেখবেন এই শব্দটি যারা উচ্চারণ করেন কিংবা লেখেন,তারা সবাই রাজনৈতিক নেতাকর্মী।
এতকথার মূলকারণটিতে এবার আসি।কোমর সোজা করে দাঁড়ানো বাংলাদেশ,মাথা নত না করা বাংলাদেশ আজ আর কারও খবরদারী মানে না।ভোগলিক উপনিবেশিকতা থেকে বের হয়ে আমাদের এই গরীব দেশটি একসময় ঢুকে পড়েছিলো অর্থনৈতিক উপনিবেশকতায়।সেই বাংলাদেশ এখন আর কোন দেশের অর্থনৈতিক উপনিবেশ নয়।যে যত বড়ই মোড়ল হোক না কেন,বাংলাদেশ এখন কাউকে সুযোগ নিতে দেয়না।আর ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে বেকায়দায় ফেলবার মোক্ষম অস্ত্র যে 'মানব ইস্যু',এই অনুমেয় সত্যটিকে সবার আগে ধরে ফেলেছে চীন।বিষয়টি আমলে নিয়েছে ভারত এবং আমেরিকা।
আসাম,মেঘালয়,ত্রিপুরা,পশ্চিমবঙ্গে অনেক দেশান্তরী বাংলাদেশী আছেন।অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতে রাজনৈতিক অঙ্গনে ইদানীং অনেক কথাই হয়েছে।সেই কবেকার আরাকান রাজ্যে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গা নামক একটি গল্প মায়ানমারকে দিয়ে তৈরী করেছে চীন।তারপর তাড়ানো হয়েছে বাংলাদেশ মুখে।দক্ষিণ এশিয়ায় ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পরাশক্তিগুলোর কাছে।তাই চীন মায়ানমারকে দিয়ে যে রোহিঙ্গা ইস্যুটি ঝুলে রেখেছে বাংলাদেশের সামনে,তার বিপরীতে চীনের প্রতিপক্ষ আমেরিকাও ফন্দি এঁটেছে ভারতকে দিয়ে অভিবাসন ইস্যু সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সামনে একটি 'মানব ইস্যু' ঝুলিয়ে দিবে।
একটি নীলনকশার অংশ ট্রাম্প প্রশাসনের এই ভিডিওক্লিপটি।ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে যাওয়া তো চাট্টিখানি কথা নয়!তাও আবার বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিকের পক্ষে ওই পর্যন্ত পৌঁছা কি সহজ কথা?লক্ষ্য করে দেখুন,ভিডিও ক্লিপটিতে যারা আছেন,তাদেরকে ওখানে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে উপস্থিত করানো হয়েছে।আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে এভাবে ঘিরে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা,আর তারা কে কি বলতে এসেছেন,তা শুনছেন মিঃ প্রেসিডেন্ট-এটি কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়।এটি আয়োজিত বিষয়।সম্ভবত,এই প্রিয়া সাহা র'এর এজেন্ট।সিআইএ প্রিয়া সাহাকে ব্যবহার করেছে র'এর সহযোগীতায়।কথাগুলো প্রিয়া সাহাকে দিয়ে বলানো হয়েছে।একদিন দেখবেন এই প্রিয়া সাহাকেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গল্প রেডি আছে।এখন ৩ কোটি ৭০ লাখের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করবে ট্রাম্প প্রশাসন।এত লোক কোথায় গেলো!খুঁজতে খুঁজতে তারা ভারতে গিয়ে জানতে পারবে বহুবছর পূর্বে বাংলাদেশের জন্মেরও আগে কিংবা ভারত ভাগেরও আগে এই ভূখন্ড ছেড়ে আসামে গিয়ে বসত গড়েছিলো লক্ষ লক্ষ মানুষ।তারা খুঁজে বের করবে এমন দেশান্তরী মেঘালয়,ত্রিপুরা,
পশ্চিমবঙ্গে কতজন আছে?মায়ানমারের দশলাখ রোহিঙ্গার বিপরীতে এবার গল্প তৈরী হবে কমপক্ষে এক কোটি মানুষের।রোহিঙ্গা নামক এই বাড়তি জনসংখ্যার ভারমুক্ত হতে গিয়ে কোনভাবেই যেন চীনের কাছে ধরা না দেয় বাংলাদেশ,সেজন্য নড়ি দিয়ে খেলার ফাঁদ তৈরী করেছে আমেরিকা।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের প্রেক্ষাপটে ৩ কোটি ৭০ লাখের এই বয়ানটি বাজারে ছাড়লো আমেরিকা।যদিওবা এদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রিয়া সাহার অভিযোগ সত্য নয় বলেছেন।তাতে খেলা শেষ হবে না কিন্তু।
পশ্চিমবঙ্গে কতজন আছে?মায়ানমারের দশলাখ রোহিঙ্গার বিপরীতে এবার গল্প তৈরী হবে কমপক্ষে এক কোটি মানুষের।রোহিঙ্গা নামক এই বাড়তি জনসংখ্যার ভারমুক্ত হতে গিয়ে কোনভাবেই যেন চীনের কাছে ধরা না দেয় বাংলাদেশ,সেজন্য নড়ি দিয়ে খেলার ফাঁদ তৈরী করেছে আমেরিকা।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের প্রেক্ষাপটে ৩ কোটি ৭০ লাখের এই বয়ানটি বাজারে ছাড়লো আমেরিকা।যদিওবা এদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রিয়া সাহার অভিযোগ সত্য নয় বলেছেন।তাতে খেলা শেষ হবে না কিন্তু।
এগুলো মোড়লদের খেলা।
No comments