পুরুষ্কারের সেই লক্ষাধিক টাকা এতিমখানায় দিতে চান সেই নাঈম!
সেই লক্ষাধিক টাকা – ছোট্ট এক শিশু। ইতিমধ্যেই পুরো দেশের নজর কেড়ে নিয়েছে। বলছিলাম বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে মানবিকতার পরিচয় দেওয়া ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া নাঈমের কথা।
বনানীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই নাঈম তার কর্মের ফলে লাখো মানুষের ভালবাসা ও দোয়া পেয়েছেন।
সেই সাথে পাঁচ হাজার ডলার পুরুষ্কারের ঘোষণাও পেয়েছেন। তাকে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি। ওমর ফারুক সামি নামের ওই প্রবাসী নাঈমকে পাঁচ হাজার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
কিন্তু সেই নাঈম কি সেই সাহায্যর টাকাগুলো নিবেন? নিলেও বা কিসে খরচ করবেন বাংলাদেশি মূল্য প্রায় ৪ লাখ পরিমান এই টাকা? সেই প্রশ্ন করেছিল জনপ্রিয় উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়।
জনপ্রিয় এই উপস্থাপকের একান্ত ব্যক্তিগত এক সাক্ষাতকারে হাজির হয়েছিলেন বনানী ট্র্যাজেডির সেই বীর নাঈম। তার সঙ্গে ছিল তার বাবা-মা।
বছর কয়েক আগে তার বাবা-মায়ের ডির্ভোস হয়ে যায়। এরপর থেকে মায়ের কাছেই বড় হচ্ছেন নাঈম। কিন্তু ছেলের বীরত্বের সঙ্গী হিসেবে সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তারাও।
সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ভবিষ্যতে পাওয়া পুরুষ্কার কিংবা টাকা কিসে খরচ করবেন নাঈম? জয়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে নাঈম বলেন, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানায় দান করে দিবেন।
নাঈম বলেন, আমাদেরকে আল্লাহতায়ালা অনেক দিয়েছেন। এতিমখানায় টাকাগুলো দান করে দিলে তারা সাহায্য পাবে। তাই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্যই দান করে দিতে চান। ছেলের এই জবাবে সায় দান তার মা-বাবাও।
পুড়ে মরার আগে স্বামীকে ফোনে যা বলেছিলেন পলি
বনানীতে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এফআর টাওয়ারের ১১ তলায় অফিস ছিল নিহত ফ্লোরিডা খানম পলির (৪৪)। কর্মরত ছিলেন শিপিং করপোরেশন প্রতিষ্ঠান ইস্কানোয়েল লজিস্টিক লিমিটেডের ম্যানেজার হিসেবে।
প্রতিদিনের মত বাসা থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। এরপর আর স্বামী-সন্তানের কাছে ফেরা হলনা তার। আগুনে পুড়ে মরলেন পলি। ঘটনার দিন স্বামী-সন্তানদের সাথে বেশ কয়েকবার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু কে জানে কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পরবেন পলি।
নিহত পলির স্বামী বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় অফিসে রওনা হন তাঁর স্ত্রী। দুপুর ১টায় ফোন করে নিজেই আগুন লাগার খবর দেন।
নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন তিনি। তখন ওড়না ভিজিয়ে নাকের কাছে নিয়ে শুয়ে পড়তে বা সম্ভব হলে ওপরে ছাদের দিকে যাওয়ার পরামর্শ দেন ইউসুফ ও তাঁর সন্তান।
কয়েক দফায় কথা হওয়ার পর দুপুর আড়াইটা থেকে তাঁকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাঁরা জানিয়েছেন ১২ তলায় ওঠার চেষ্টা করার সময় সিঁড়িতে ধাক্কাধাক্কি হচ্ছিল। তখন ধোঁয়া ও অন্ধকারের মধ্যে সিঁড়িতে পড়ে যান ফ্লোরিডা। একপর্যায়ে হয়তো পদদলিত হয়ে এবং শ্বাসকষ্টে তিনি মারা যান।’
রাত ৮টায় পরিবার জানতে পারে সিএমএইচে তাঁর মরদেহ আছে। গতকাল শুক্রবার জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জের আলিডাঙ্গা কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
No comments