Breaking News

হ্যাকিং থেকে বাঁচতে কি করবেন?

তথ্যপ্রযুক্তির এই চরম উৎকর্ষতার যুগে আরেকটি ব্যাপার আমাদের ভাবিয়ে তুলছে তাহলো হ্যাকিং। আজকাল অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে। ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারিয়ে অনেকে বিপাকে পরেন। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম”। তাই হ্যাকিং থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। এ থেকে বাঁচতে কি করবেন

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন
এক কথায় বলবো প্রথমে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। বড় ও ছোট হাতের অক্ষর,সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্নের(@,#,$,%,-,_) সমন্বয়ে ১৪ কিংবা ততোধিক ডিজিটের পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। একই পাসওয়ার্ড একাধিক অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করবেন না।নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
অ্যাকাউন্ট সমূহে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন
আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টসমূহে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন। এতে হ্যাকার আপনার পাসওয়ার্ড জেনে গেলেও আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। আপনার ফোনে প্রেরিত সিকিউরিটি কোড সাবমিট না করা পর্যন্ত।
অনেকসময় হ্যাকাররা ভুয়া লগইন পেইজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড হাতানোর চেষ্টা করে। যা ফিশিং নামে পরিচিত। তাই কোনো অনলাইন অ্যাকাউন্টে লগইন করার পূর্বে ওয়েব এড্রেসটি ভালোভাবে লক্ষ করুন সেটি আসল কিনা।
অপরিচিত কাউকে ছবি দিবেন না
অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন- ছবি, ঠিকানা , জন্মতারিখ ইত্যাদি) অপরিচিত কাউকে দিবেন না।
ই-মেইল থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন
স্প্যাম ই-মেইল থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। অনেক সময় সাইবার অপরাধীরা লোভনীয় ও আকর্ষণীয় ইমেইল পাঠায় যেখানে বলা হয় আপনি লটারি জিতেছেন,ঘরে বসে আয় করুন,চাকরির অফার,পণ্যে ছাড়,সাহায্যপ্রার্থী,আনপেইড ইনভয়েস ইত্যাদি।এসবের মাধ্যমে তারা আপনার অর্থ, ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়া অথবা আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার সংক্রমণের চেষ্টা করে থাকে। তাই এরকম স্প্যাম ইমেইল কখনো খুলবেন না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত কাউকে বন্ধু বানানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এক্ষেত্রে তার প্রোফাইলটি আসল কিনা যাচাই করুন।
অ্যন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
ভালো মানের অ্যন্টিভাইরাস  সফটওয়্যার ব্যবহার করুন যেটা ভালো মানের ইন্টারনেট সিকিউরিটি সেবা প্রদান করে।অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার নিয়মিত হালনাগাদ করুন।ফ্রি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। র‍্যানসমওয়্যার থেকে বাঁচতে অ্যান্টি-র‍্যানসমওয়্যার টুল ব্যবহার করুন।
নিয়মিত ব্যবহারের জন্য আপনার কম্পিউটারের এডমিনিস্ট্রেটর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করবেন না। একটি গেস্ট অ্যাকাউন্ট খুলুন যেখানে কিছু সীমাবদ্ধ সুবিধা থাকে এবং সেটা ব্যবহার করুন।
সকল নিরাপত্তা সফটওয়্যারগুলো সক্রিয় রাখুন
আপনার ডিভাইসের সকল নিরাপত্তা সফটওয়্যারগুলো সক্রিয় রাখুন। যেমন- ফায়ারওয়াল, এন্টিভাইরাস, এন্টি-স্পাইওয়্যার।ব্যবহার শেষে ওয়াইফাই,ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন। অযথা চালু রাখবে না।
অপারেটিং সিস্টেম এবং ব্যবহৃত সকল সফটওয়্যারের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করুন, বিশেষ করে সিকিউরিটি প্যাচ।হ্যাকাররা কোনো সফটওয়্যারের ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো হালনাগাদ সংস্করণ বের করার মাধ্যমে এসব রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
তাই সর্বদা আপডেট রাখুন আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস।

নিজের স্মার্টফোন দেওয়া হতে বিরত থাকুন
অপরিচিত কাউকে নিজের স্মার্টফোন দেওয়া হতে বিরত থাকুন। আপনার ওয়াইফাই অ্যাকসেস পয়েন্টের এনক্রিপশন ডব্লিউপিএ২ নির্বাচন করুন।
কোনো আকর্ষণীয় বা রঙিন এমন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন না। অনেকসময় হ্যাকাররা এসব মাধ্যমে ফিশিং বা ভাইরাস আক্রমণের ফাঁদ পেতে রাখে।এর থেকে বাঁচতে এডব্লকার ব্যবহার করুন।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আচমকা কোনো পপআপ বক্স খুলে গেলে সেখানে ক্লিক করবেন না। এতে আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ইন্সটল হয়ে যেতে পারে।এর থেকে বাঁচার জন্য পপআপ ব্লকার ব্যবহার করুন
ইন্টারনেটে অপরিচিত উৎস হতে কোনো কিছু ডাউনলোড করবেন না।
পাইরেটেড (চোরাই) সফটওয়্যার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এরকম সফটওয়্যারে অনেকসময় ব্যাকডোর বসানো থাকে যার মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার ডিভাইসে সংরক্ষিত তথ্য পাচার করে।
ওয়েব ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে যখন আপনি অন্যের কম্পিউটার বা একাধিক ব্যবহারকারী আছে এমন কম্পিউটারে ব্রাউজিং করছেন। কাজ শেষে লগআউট করতে ভুলবেন না।
পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্ক হোন। পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট হলে সামাজিক মাধ্যম, ইমেইল বা ব্যাংকিংয়ের কাজ করবেন না। যদি একান্তভাবে ব্যবহার করতে চান তবে ভালো মানের ভিপিএন কানেক্ট করে ব্যবহার করুন।
পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন
আপনার কম্পিউটারে বিআইওএস পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন। যাতে অন্য কেউ আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করতে না পারে।
স্মার্টফোনে স্ক্রিনলক ব্যবহার করুন। পাসওয়ার্ড, পিন নম্বর বা প্যাটার্নের মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনটির স্ক্রিন লক করে রাখুন।
ব্যবহারের পর সংশ্লিষ্ট ডিভাইস বা অ্যাকাউন্ট লক/লগআউট করুন।
প্রয়োজনীয় ফাইলের ব্যাকআপ রাখুন কোনো নিরাপদ পেনড্রাইভ বা রিমোভেবল হার্ড ডিস্ক কিংবা ক্লাউড ব্যাকআপ সার্ভিসে।
মাইক্রোসফট অফিসে ম্যাক্রো ডিজেবল রাখুন এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম অটোরান ফিচারটি বন্ধ রাখুন।
অপরিচিত পেনড্রাইভ বা এক্সটারনাল ড্রাইভ প্লাগইন করবেন না। যদি একান্তভাবে করতে চান তাহলে অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করার পর সেটা নিরাপদ কিনা নিশ্চিত হোন।

No comments