সোয়া ২ কোটি নতুন ভোটারের মন জয়ে এগিয়ে আ.লীগ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৭৭ জন ভোটার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেশে ভোটার ছিলেন মোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ১৬৭ জন। আর নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩ জন। অর্থাৎ নবম সংসদ নির্বাচনের পর দেশে নতুন ভোটার হয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ ৩ হাজার ৪৭৪ জন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহণ না থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই হতে যাচ্ছে তরুণদের ভোটদানের সেরা মঞ্চ।
সব কিছু ঠিক থাকলে আসন্ন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক নতুন ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাচ্ছেন। এটা তাদের জন্য যেমন নতুন অভিজ্ঞতা, তেমনি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তরুণ এই নতুন ভোটাররাই এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের নিয়ামক হবে। আর এ কারণেই আসন্ন নির্বাচনে তরুণসমাজের প্রথম ভোটটি নেয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দলের তরফেই থাকবে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা।
এ চেষ্টায় কার্যত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবেই এগিয়ে আছে। তরুণদের আকৃষ্ট করতে ডিজিটাল ভুবনে চলছে নতুন সব আইডিয়া নির্ভর প্রচারণা। ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে চলছে তুমুল প্রচারণা। এসব প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তরুণদের আইকন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের মতো তারকা। এছাড়াও চিত্রনায়ক ফেরদৌস, রিয়াজ, শাকিল খান, টিভি অভিনেতী তারিন, বাঁধন, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ, গায়িকা পড়শি’র মতো তারকারা নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে ভিডিও পোস্ট করেছেন। সব মিলিয়ে তরুণদের মন জয়ে কোমর বেঁধেই মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ।
বিপরীতে, বিএনপি তাদের নির্বাচনি প্রচারে অবলম্বন করেছে সনাতনী পদ্ধতি। ‘তরুণদল’ ব্যানারে ফেসবুকে ‘কুৎসা’ রটনার মতো করে প্রচারণা চললেও তাতে তরুণদের আকৃষ্ট করার উপাদান তেমন নেই। উল্টো কণ্ঠশিল্পী মনির খান ও ফুটবলার আমিনুল হক দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেক তরুণই মনোকষ্টে ভুগেছেন। দলের মনোনয়ন না পেয়ে কেবল পদত্যাগই করেননি পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে তার আসনে জামায়াত নেতাকে প্রার্থী করায় দলের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পী মনির খান। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠে তরুণদের কাছে ভুল বার্তা গেছে বলেই মনে করছেন তরুণ ভোটাররা।
আসন্ন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ইশতিয়াক আহমদ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়ুয়া ইশতিয়াক দৈনিক জাগরণকে বলেন, তরুণরা চায় সমৃদ্ধ আগামী। আর এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ একটা আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি তরুণদের চাওয়া ঠিকঠাক ধরতে পেরেছেন বলেই মনে করি। যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ইশতেহার দেন তাহলে নৌকার বিজয় ঠেকিয়ে রাখা কারো পক্ষে সম্ভব হবে না।
ইডেন কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী শাহিনা মনি বলেন, আওয়ামী লীগ টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকায় বিএনপির সামনে বড় ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু সঠিক রাজনীতি না করার কারণে ভোটের মাঠে তারা পিছিয়ে পড়ছে। তরুণরা বিএনপিকে ভোট দিতে চাইলে কোনো প্রত্যাশা না রেখেই দলটিকে ভোট দিতে হবে। খালেদা বা তারেক বা জামায়াতকে পুর্নবাসিত করার লক্ষ্য ছাড়া বিএনপির সামনে কোন লক্ষ্য আছে বলে মনে হচ্ছে না।
তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে আওয়ামী লীগের উদ্যোগ নিয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো- চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম জাগরণকে বলেন, তরুণ সোয়া ২ কোটি ভোটারকে নিয়ে আমাদের বিশেষ ভাবনা আছে। তরুণ এই ভোটারদের মনতুষ্টিতে নির্বাচনি ইশতেহারে আমরা একগুচ্ছ ঘোষণা রাখছি। তরুণদের ভবিষ্যতের কথা সামনে রেখেই প্রণীত হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার।
এইচ টি ইমাম বলেন, ইশতেহার ঘোষণার পর নিজেদের ভবিষ্যৎ বির্নিমাণের অংশ হিসেবেই তরুণরা আওয়ামী লীগের সহযাত্রী হবে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তরুণদের কাছে এ বার্তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে যে, আধুনিক সমৃদ্ধ উন্নত দেশ গড়তে শেখ হাসিনা তথা নৌকার বিকল্প নেই। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা বলছি, ‘তরুণদের প্রথম ভোট- নৌকায় হোক’।
No comments