Breaking News

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা কি বলি?: শেখর দত্ত

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গত বুধবার সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা খোলামেলা বক্তব্য রেখেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই অনভিপ্রেত দুর্ভাগ্যজনক ও মর্মান্তিক বিষয়টি নিয়ে পথে-ঘাটে, ঘরে-অফিসে, আড্ডায়-সভায়, পত্রিকা-টিভিতে যেভাবে আলোচনা হচ্ছিল; তাতে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি ওঠাই ছিল স্বাভাবিক এবং স্বীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যও দিয়েছেন খোলামেলা।
প্রসঙ্গত বলতেই হয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর গত দুই-তিন দিনে কয়েকবার এমন কথা কানে এসেছে যে, এবারে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থে কাজ কিছু একটা হবে। ধারণা করি জনগণের এই উপলব্ধির কারণ অভিজ্ঞতাজাত। কেননা মানুষ দেখছে গণস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় চূড়ান্তে পৌঁছার পর তা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে মুখ খোলেন এবং তখন তা সমাধানের পথে অগ্রসর হয়। সমাধানের পথ এমনটা হওয়ার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, ভালো-মন্দ এই কলামের মূল আলোচ্য বিষয় নয়। সমস্যার গভীরতা ব্যাপকতা ও জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে সমাধানের পথ অনুসন্ধানের জন্য কিছু বিষয় এখানে আলোচনা করা হলো।
গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার এই কথাগুলো অনেকে পছন্দ করবেন না, কিন্তু যা বাস্তব, তাই বলছি। আপনি বাসে চড়ে যাচ্ছেন, কেন আপনি হাত বাইর করে যাবেন? আপনারা (সাংবদিক) যার হাত গেল, তার জন্য কান্নাকাটি করছেন, কিন্তু সে যে নিয়ম মানল না, সে কথা তো বলছেন না।.. দোষ দেয়া হয় রাস্তার, সড়কমন্ত্রীর ও চালকের। চালককে শাস্তি দিতে হবে, দেয়া হবে। তবে পথচারী আইন মানছে কি না, সে সচেতনতাটাও দরকার।’ পথচারীদের সচেতনতা তৈরিতে বেসরকারি গণমাধ্যমগুলোকে প্রচার চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মানুষের পাল্স বা নাড়ির স্পন্দন ঠিকই বুঝেছেন। তাই উল্লিখিত ধরনের বক্তব্য রাখার পর গত একদিনে আশপাশের মানুষ, যারা প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী তাদের প্রতিক্রিয়া অনুধাবন করে বুঝলাম, অনেকেই পথচারীদের নিয়ম মেনে চলা ও গণসচেতনতার কথাগুলো পছন্দ করেননি। কেউবা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। প্রবাদ বলে, উচিত কথায় বন্ধু বেজার। প্রসঙ্গত যদি অভিজ্ঞতা বিবেচনায় উপরোল্লিখিতভাবে ধরে নেয়া যায়, সমস্যা এবারে সমাধানের পথে যথাসম্ভব অগ্রসর হবে; তবে এটাই বলতে হয়, কথা দিয়ে সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ী মহলকে ক্ষুব্ধ করার কোনো প্রয়োজন আছে কি? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রায়ই স্পষ্ট কথা বলে অনেকের বিরাগভাজন হতে হয় কেন এই প্রশ্নটি নিয়ে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে তাই ভাবতেই হচ্ছে।
এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, খোলামেলা ও স্পষ্ট কথা বলবেন এবং বলা উচিত জাতির বিবেক সুশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের তৃতীয় নয়ন গণমাধ্যমের। কেননা স্বাভাবিক কারণেই রাজনীতিকরা থাকেন দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাচেতনা, সুবিধা প্রভৃতির গণ্ডির মধ্যে। প্রশ্ন হলো সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ে যান চালক ও মালিকদের ভ‚মিকা প্রধান হলেও পথচারীদের নিয়ম মেনে চলা ও সচেতনতার বিষয়টা কি সুশীল সমাজ ও পত্র-পত্রিকা সামনে আনছেন? প্রশ্নটা নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা যখন বাড়ছে, তখন সেই দিনগুলোর সব পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন, কলাম ও বক্তৃতা-বক্তব্য পড়ে দেখার খুব ইচ্ছা হলো। কিন্তু এত সব পত্রিকা পড়ে দেখা আসলে সময় বিবেচনায় অসম্ভব। তবু যা দেখেছি, তাতে মনে হয় ওই উচিত কথাটি আসলে গুরুত্ব পায় না। আর তাই আলোচনাও হয় না।
প্রসঙ্গত ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে অর্থাৎ বিগত ১১ দিনে প্রথম আলো পত্রিকাটি বেশ কতক বড় বড় প্রতিবেদন ছাড়াও সম্পাদকীয় লিখেছে ৩টি। এর মধ্যে পথচারীদের নিয়ম মানা ও গণসচেতনার বিষয়ে কিছুই লেখা নেই। ৩টি সম্পাদকীয়ের মধ্যে ২টি সুনির্দিষ্ট দুর্ঘটনা নিয়ে হলেও ১টিতে ওই পত্রিকার দৃষ্টিভঙ্গি পূর্ণাঙ্গভাবে সব তুলে ধরা হয়েছে। ‘সড়কে বিপজ্জনক বিশৃঙ্খলা/এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না’ শিরোনামে ওই সম্পাদকীয়তে চালকদের ‘লেন অনুসরণের বালাই নেই’, বাস চালকদের আইন ‘ভঙ্গ করা’, ‘প্রতিযোগিতার ফল দুর্ঘটনা’, যেখানে সেখানে ‘বাস থামানো’, রাস্তাঘাটের সংখ্যা ও পরিসরের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা ‘মাত্রাতিরিক্ত বেশি’, ‘ত্রুটিযুক্ত, পুরনো ও চলাচলের অনুপযুক্ত ফিটনেসবিহীন যানবাহন’, অদক্ষ বা বালক বা লাইসেন্সবিহীন চালক, পুলিশসহ কর্তৃৃপক্ষের ‘তাগিদ ও আগ্রহ’ না থাকা, রাস্তায় ‘চাঁদাবাজি’, ‘এই ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় মন্ত্রী সাংসদ ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের দ্বারা’, ‘মালিক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী’ প্রভৃতি সব যথাযথ কথা লেখা রয়েছে। কিন্তু যা নেই তা হচ্ছে পথচারী ও যাত্রীদের আইন না মানা ও গণসচেতনতার বিষয়।
পাঠকরা আরো একটি উদাহরণ লক্ষ করুন। সড়ক দুর্ঘটনা যাত্রী কল্যাণ সমিতির ১ মে প্রকাশিত বিবৃতিটিতে খুব সুন্দরভাবে সারা দেশের চলতি বছরের প্রথম চার মাসের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। যেমন এপ্রিল মাসে ৪২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৭৮ জন আহত ও ৪৬১ জন নিহত হয়। এ সব ঘটনায় ১১৮টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮৯টি খাদে পড়ে, ১টি বাস-ট্রেন সংঘর্ষ ও ২১১টি গাড়ি চাপায় বলা হলেও তাতে যাত্রীদের আইন না মেনে চলায় কোনো দুর্ঘটনা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো কিছু উল্লেখ নেই। যতটুকু ধারণা করা যায়, পত্রিকা থেকে নেয়া এ সংক্রান্ত রিপোর্টে ওই বিষয়টি না থাকায় তা তারা উল্লেখ করতে পারেনি। সর্বোপরি ওই সমিতির দশ দফা সমাধানের সুপারিশেও এ বিষয়ে কোনো কথা নেই।
এখানে পথ চলাচলে আইন মানা বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথাই বলি। কখনো বা কার্যোপলক্ষে বাংলা মোটর বা পুরানা পল্টনে আমার রাস্তা পার হতে হয়। এই দুই জায়গায়ই ব্যস্ত রাস্তায় ওভারব্রিজ রয়েছে। আমি কখনো তাতে উঠি আবার কখনো নিয়ম ভাঙি। আর কেউ যদি আমার মতো অভিজ্ঞতা নিতে চান, তবে পুরানা পল্টন থেকে দৈনিক বাংলার মোড় বা বাংলা মোটর থেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত হেঁটে দেখতে পারেন। প্রসঙ্গত দ্বিতীয় রাস্তার ফুটপাতটিতে কি নেই! ফুটপাত দখলে থাকায় আমাকে তো ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। ফুটপাতজুড়ে দোকানপাট, খানাখন্দ, গাড়ি-মোটরসাইকেল গ্যারেজ, বড় ভবনে ওঠার জন্য ঢালু ফুটপাত, ম্যানহোলের ঢাকনা ভাঙা তাই গভীর গর্ত, ময়লা ফেলা, মোটরসাইকেলের ফুটপাত দিয়ে চলা, উল্টো দিক থেকে রিকশা-মোটরসাইকেল আসা ও প্রয়োজনে ট্রাফিকের কাছে নোট গুঁজে দেয়া প্রভৃতি সবই বাংলা মোটর-মগবাজার রাস্তায় রয়েছে।
উল্লিখিত সমস্যাগুলোর সঙ্গে সরকার বা কর্তৃপক্ষ নিঃসন্দেহে জড়িত। কিন্তু নাগরিক সচেতনতার বিষয়ও কি জড়িত নয়? ফুটপাতে কি করা যাবে আর করা না যাবে, সে সম্পর্কে কি সবাই সচেতন! আর সচেতন সবাই কি তা মানে! আইন-কানুন-নিয়ম প্রভৃতি সবই কারো না কারো স্বার্থে-সুবিধায়-পেটে আঘাত করে। নাগরিকরা কি তা বুঝে! সহজে বুঝানো কি যাবে! আর নাগরিকরা সচেতনা ও সোচ্চার না হলে সরকার কতটুকু কি পারবে? হাইকোর্টের রায়ের পর বহু চেষ্টা করেও ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো বন্ধ করা এবং গুলিস্তান-পুরানা পল্টন এলাকায় হকার তোলা সম্ভব হয়নি। না তুলতে পারার মধ্যে রাজনীতির মাস্তান ও পুলিশ ঠিকই রয়েছে। তবে গণসচেতনতা কি দায়ী নয়!
গতকালও দেখলাম, সচিবালয়ের অপর পাশের ফুটপাতে কেবল হকার না, চেয়ার পেতে সেলুন বানিয়ে চুল কাটা হচ্ছে। সেখানে ভিড়ও আছে। রাজধানীর কেন্দ্রে প্রশাসনের নাকের ডগায় অপূর্ব দৃশ্য! কয়েক মাস আগে দূরপাল্লার বাসে চড়ার সময়ের অভিজ্ঞতা হলো, অন্য বাস যখন আমাদের গাড়িকে অতিক্রম করে চলে যাচ্ছিল, তখন ড্রাইভার-হেলপারের গালি শুনতে হচ্ছিল। ইতোমধ্যে যানবাহনে যৌন হয়রানির সংখ্যা বাড়ছে। তদুপরি রাস্তা পার হওয়ার সময়ে মোবাইল ফোন, হেডফোন ব্যবহার করা হয়। জেব্রা ক্রসিং, সিগন্যাল বাতি তো ব্যতিক্রম বাদে কারো হিসাবের মধ্যেই থাকে না। নিঃসন্দেহে এ রকম আরো অনেক অনেক আইন না মানার প্রবণতা ও অসচেতনতার উদাহরণ তুলে ধরা যাবে।
এখানে আমেরিকার রাস্তার একটি উদাহরণ টেনে আনা যেতে পারে। প্রবাসী ছোট ছেলে অতনুর গাড়িতে আমরা ঘুরছি। হঠাৎই চোখে পড়ল রাস্তার ওপরে রেললাইন। ট্রেনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কোনো রেলগেট নেই। গাড়ি রেল রোড পার হয়ে গেল। ওর মা চিৎকার দিয়ে উঠল। আমিও আতঙ্কিত হলাম। অতনু বলল, ‘রেলগেট প্রয়োজন নেই। সিগনাল রয়েছে। ওটা দেখার দায়িত্ব সড়ক পথের যাত্রীদের।’ প্রকৃত বিচারে আইন মানা ও গণসচেতনতা হচ্ছে সেই দেশের মূল বিষয়। মানুষ আইন মানে। আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে মান্য করে। এই দিকটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আমাদের দেশে তা যেমন মানা হয় না, তেমনি আলোচনায়ও উঠে আসে না।
ইতোমধ্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের সাক্ষাৎকারটি পড়েছি। সড়কের অব্যবস্থা, আইনের পরিবর্তন ও প্রয়োগের বিষয়ে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী যুক্তিপূর্ণ ও অবশ্য বাস্তবায়নযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। সেখানেও কিন্তু নেই যাত্রীদের সচেতনতার বিষয়টি। এই অবস্থায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ গণমনে এমন ধারণা দিচ্ছেন যে, যানবাহনের মালিক-নেতা ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের বিচার করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আসলে কি তাই! তারা একদিক দেখছেন আরো একটা দিক দেখছেন না। একজন ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করলেও লঙ্কাকাণ্ড ঘটে। আর মালিক-নেতা-মন্ত্রীকে আইনের আওতায় আনলে কি ধরনের নৈরাজ্যকর ঘটনা ঘটবে, তা কি অনুমান করা চলে। আসলে চাই বাস্তবযোগ্য সমাধানের পথ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে সেই দিকের নির্দেশনা রয়েছে। ইতোমধ্যে রাস্তায় কিছু কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, আইন সংশোধন করা হবে।
তবে আশার কথা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগেই গণসচেতনতার বিষয়টি কেউ কেউ তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন। পত্র-পত্রিকার কোনায় পড়ে থাকছে কথাটা। পত্রিকা অনেক ঘেঁটে দেখলাম, ২৮ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন এবং ২৩ এপ্রিল নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন নাগরিক গণসচেতনার বিষয়ে বলেছেন। ভুক্তভোগী ইলিয়াস কাঞ্চন তার অভিজ্ঞতা থেকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘প্রত্যেকেরই দায়দায়িত্ব আছে নিরাপদ সড়কের জন্য। কেবল চালকরাই দায়ী নয়- সাধারণ যাত্রী, পথচারী, পরিবহন মালিক সবার আরো সচেতন হওয়া জরুরি।’ ক্ষীণভাবে প্রচারিত হওয়া এই কথাটিই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। এই কথাটা বলা হয় না, বললেও প্রচার হয় না; তাই স্পষ্ট কথাটা অপ্রিয় হলেও প্রধানমন্ত্রীকেই বলতে হয়। গণসচেতনতাকে ঘা দেয়ার ক্ষেত্রে এছাড়া আর উপায় বোধকরি নেই। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বলায়ই কিন্তু এটা এখন লাইম লাইটে এসেছে।
সবশেষে এটাই বলতে হয় যে, আইনকানুন মেনে চলা, গণসচেতনতা প্রভৃতি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অখণ্ড সমগ্র। এক জায়গায় সব ঠিকঠাক থাকবে আর অন্য জায়গায় তা থাকবে না এমনটা হওয়ার নয়। বৃত্ত বা অক্টোপাসের মতো একটা অপরটাকে বেঁধে রাখে। তবে এক ক্ষেত্রের জন্য অপর ক্ষেত্র বসে থাকে এমনটাও নয়। কোথাও না কোথাও থেকে তো শুরু হয়। এ জন্যই প্রয়োজন হয় ব্রেকথ্রো, যাকে বলা যেতে পারে ক্ষতিকর বৃত্ত ভেঙে অগ্রসর হওয়া। সবচেয়ে ক্ষতিকর, স্পর্শকাতর ও দুর্বল; যাতে সব মানুষের স্বার্থ জড়িত, যাতে মানুষ সবচেয়ে বিক্ষুব্ধ থাকে; সেখানেই সচেতন বা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে বা এ দুই একত্রে ঘটায় ব্রেকথ্রো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট বক্তব্য বিবেচনায় নিয়ে বলছি, এখন থেকেই সরকারি উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে হোক না ওই অশুভ বৃত্ত ভাঙার যাত্রা। নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম হোক নিরাপদ সমাজ ও দেশ গড়ার সংগ্রামের অগ্রপথিক।
সৌজন্যেঃ দৈনিক ভোরের কাগজ

No comments