Breaking News

"বঙ্গবন্ধুর কাছে আমাদের ঋণ"

"বঙ্গবন্ধুর কাছে আমাদের ঋণ"

শনিবার ২ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে হোটেল লেকশোরে ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে আমাদের ঋণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরামের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছোট্ট শিশু আরহাম চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আহবায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত, সংসদ সদস্য ডিউক চৌধুরী এবং গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ফারজানা চৌধুরী। বাংলাদেশের মানুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল মন্তব্য করে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ‘একাত্তরের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি শুনে ৮ই মার্চ আমি আমার গ্রামে চলে যেই। পরে ১৪ মার্চ আমাদের এলাকার থানা লুট করি।’ শনিবার হোটেল লেকশোরে ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরাম আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে আমাদের ঋণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের কথা স্মরণ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তখন আমি ২৪ বছরের টগবগে যুবক। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি শোনার। পরের দিন ৮ই মার্চ আমি আমার গ্রামে চলে যায়। সেখান থেকে ১৪ মার্চ আমাদের এলাকার থানা লুট করি।’ এভাবেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার এবং সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততার স্মৃতিচারণ করে স্বাধীনতার ঘোষক বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টার জবাব দেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা সমাজের অগ্রসর অংশ হিসেবে স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিলেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ৯৫ শতাংশ মানুষ ছিল গ্রামের নিরক্ষর কৃষকের সন্তান। যাদের বয়স ১৬ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। গ্রামের ওই কৃষকদের সাধারণ সন্তানরা থ্রি নট থ্রি রাইফেল নিয়ে রাতের আধারে প্রশিক্ষিত পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে। তাদের অনেককে তখন জিজ্ঞেস করেছি কিসের জোরে তারা এমন দু:সাহসী যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লো উত্তরে তারা আমাকে বলেছে এটা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ।’ একই সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘ আমরা যেমন আমাদের পিতার ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারি না তেমনি বাঙালী হিসেবে কোনদিনই বঙ্গবন্ধুর ঋণ শোধ করতে পারবো না। তবে পরিবারে যেমন একজন সন্তান তার বাবার আমানত সংরক্ষণ করে বাবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারে তেমনি আমরাও জাতির পিতার রেখে যাওয়া আদর্শ মত চলে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারি। কিন্তু তার ঋণ কোনদিনই কোন বাঙালী শোধ করতে পারবে না।’ অভিনেত্রী নওশীনের উপস্থাপনায় আরো বক্তব্য দেন ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরামের উপদেষ্টা চিত্রনায়ক আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তরুণ প্রজন্মই এগিয়ে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তারাই দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসবে। তাহলেই বাংলাদেশ স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে। অভিনেত্রী শম্প রেজা তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাধনাকে জানতে হলে আমাদেরকে আরো বেশি বেশি করে তাকে জানতে হবে এবং পড়তে হবে। তার আদর্শে যদি চলতে পারি তবেই বাংলাদেশ সত্যিকারের একটি সোনার বাংলা হবে।’ সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আহবায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন,‘ বঙ্গবন্ধুর ঋণ আমরা কখনোই শোধ করতে পারবো না কিন্তু তার আদর্শকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারি। তার আদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা দেখানো সম্ভভ হবে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করার জন্য যিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। তার হাতকে শক্তিশালী করতে পারলেই প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া হবে।’ সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদ সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। অনুষ্ঠানের মাঝে বিভিন্ন সময় ভিডিও বার্তায় রামেন্দু মজুমদার, সৈয়দ হাসান ইমাম, গাজী রাকায়েতদের সিনিয়র সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সেমিনারের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোজাহের উদ্দিন চৌধুরি কমল। ইয়ুথ বাংলা কালচারাল ফোরামের সভাপতি সুফি ফারুক তার সমাপনী ভাষণে বলেন, আগামী ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদযাপন করতে চাই। এই জন্য আমাদের শিল্পী সমাজ বর্তমান সরকারকে সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’ ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে আমাদের ঋণ’ শীর্ষক সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, চিত্র নায়ক আলমগীর, মাসুদ আলী খান, রহমত আলী, আল মামুন, মাসুম রেজা, মাজনুন মিজান, অভিনেত্রী র্শমীলী আহমেদ, ডলি জহুর, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, সম্পা রেজা, পূর্ণিমা, বিজরী বরকতউল্লাহ, শারমীন শীলা, তানভীন সুইটি , তারিন, নওশীন, স্বাগতা , নাবিলা। সঙ্গীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ, এস. আই. টুটুল, আঁখি আলমগীরসহ সংস্কৃতি জগতের জনপ্রিয় মুখগুলো।

No comments